
ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমল
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সব মুখ্য সচিবই ছিলেন বিতর্কিত ও অপকারী
👇
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন শেখ হাসিনা। তার এ শাসনামলে মোট আটজন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য বিতর্কিত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছাকেই তারা প্রাধান্য দিয়েছেন বেশি। এর প্রতিদান হিসেবে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃতও হয়েছেন সরকারের সাবেক এ কর্মকর্তারা। আবার কারো কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওয়ান-ইলেভেনের আগে থেকেই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য সক্রিয় নানা ভূমিকা রেখেছিলেন তারা।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে যে আট আমলা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন; তারা হলেন মো. আব্দুল করিম, শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান, আবদুস সোবহান সিকদার, আবুল কালাম আজাদ, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, নজিবুর রহমান, আহমদ কায়কাউস ও মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। আনুগত্যের পুরস্কার হিসেবে পরে তাদের কাউকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আবার মন্ত্রী পদমর্যাদার উপদেষ্টা, এমপি বা রাষ্ট্রদূতও হয়েছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছিল এবং তার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও তার মুখ্য সচিবরা। কর্তৃত্ববাদী সরকারের যে ১৫ বছরের শাসন, সেখানে পুরো রাষ্ট্রকাঠামো ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছিল। পুরো রাজনৈতিক এবং গভর্ন্যান্সের স্ট্রেসটা মনোপোলাইড বা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা হয়েছিল। এতে কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী ও তার দোসররা যেমন দায়ী, তেমনি বিতর্কিত মুখ্য সচিবদেরও দায় ছিল। এসব আমলা জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নন, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করা ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ‘আমাদের জন্য দুঃখজনক বিষয় যে তারা (মুখ্য সচিব) বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে চক্রের সঙ্গে থাকার জন্য। এভাবে অন্যদেরও উৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে আমলাদের জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার চেয়ে ব্যক্তি বা দলকে সুবিধা দেয়ার কাজটিই করেছেন তারা।’