

নোয়াখালী থেকে পাঠানো :
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় গণপিটুনিতে গুরুত্বর আহত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশ নিহত যুবক আগে থেকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত এবং একাধিক মামলার আসামি ছিল বললেও জানা যায় সে যুব লীগের নেতা। এদিকে, নিহত ওই যুবককে রশি দিয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় বেধড়ক পেটানোর ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ভিডিও টা বেশ ভাইরাল হয়। ভিডিও টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে বেশ আলোচনা সমালোচনা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পরে।
গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে, একই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের সূর্যনারায়নবহরস্থ ইসমাইল মুহুরীর বাড়ি থেকে ৪ যুবককে ছাত্র-জনতা গণপিটুনে দিয়ে একটি পাইপগানসহ যৌথ বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে।
নিহত মো. আব্দুস শহীদ (৪৩) উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের চরমটুয়া গ্রামের মমিন উল্যাহ মুন্সির ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইসমাইল মুহুরী বাড়িতে স্থানীয় ছাত্র জনতা ঘেরাও করে ১টি পাইপগানসহ আব্দুস শহীদ (৪৩), মো. জামাল হোসেন (৪২), মো. জাবেদ (২৮) ও মো. রিয়াদ হোসেন (৩৬) নামে ৪ যুবককে আটক করে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ১টি পাইপগানসহ ৪ যুবককে আটক করে সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করে। পরে আহত শহীদকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে জানতে নিহতের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক তাদের পাওয়া যায়নি। তাই তাদের বক্তব্য দেওয়া যায়নি।
অপরদিকে, নিহত যুবক মো. আব্দুস শহীদকে পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ – সভাপতি দাবি করেছে স্হানীয় আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকেও জানানো হয়েছে, আব্দুস শহীদকে পিটিয়ে মেরেছে বিএনপির স্হানীয় সন্ত্রাসীরা। শহীদের মৃত্যুর আগে তাকে হাসপাতালে না নিয়ে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ততক্ষণে তার জীবন প্রায় নাই বললেই চলে।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, পাকা মেঝেতে হাত ও হাতের বাহু বাঁধা অবস্থায় পেলে রেখে শহীদকে ভারী লাঠি দিয়ে পুরো পায়ের মাংসপেশিতে নির্মমভাবে পিটাচ্ছে এক যুবক। আরেক ব্যক্তি এক হাতে মুঠোফোন অন্য হাত দিয়ে শহীদের হাতে বাঁধা রশি খুলছে। এরপর লাঠি হাতে থাকা যুবক তাকে মাথায়,মুখে লাথি মারছে।
স্হানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, স্হানীয় বিএনপির চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা যুব লীগ নেতা শহীদকে আটক করে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করে। তারা শহীদ হত্যার দায় থেকে রক্ষা পেতে ভাঙা পাইপগান দিয়ে সন্ত্রাসী সাজিয়ে যৌথ বাহিনীর হাতে তুলে দেন। এটা একটি নাটক সাজিয়ে তারা শহীদকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।