
চট্টগ্রামে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনি জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না দেওয়াকে কেন্দ্র করে তার ভক্ত ও অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামের একজন আইনজীবীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত আইনজীবী ছয় বছর ধরে আইনি প্র্যাকটিস করছেন। গত বছর হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন বলে জানা গেছে।
নিহত আলিফ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবীরা।

কাজ শেষে আদালত থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাইফুল ইসলাম। আদালতের বিপরীত দিকে অবস্থিত স্থানীয়ভাবে পরিচিত রঙ্গম গলি বা মেথর পট্টির ভেতরে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
কে ছিলেন নিহত এই আলিফ?
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফ। ২০১৮ সাল থেকে চট্টগ্রামে প্র্যাকটিস শুরু করেন এবং পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন।
চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক বলেন, ‘উনি চট্টগ্রাম বারের রেগুলার আইনজীবী ছিলেন। পাঁচ-ছয় বছর প্রফেশনে আছেন, ২০১৮ সাল থেকে চট্টগ্রামে প্র্যাকটিসে আছেন। গত বছর হাইকোর্ট বারে সনদ পেয়েছেন।’ তবে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমে তাকে সহকারী কৌঁসুলি হিসেবে উল্লেখ করা হলেও তিনি রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তা ছিলেন না বলেও জানান তিনি।
ব্যক্তিগতভাবে নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফকে চিনতেন বলে জানান এই আইনজীবী নেতা। অসুস্থতাজনিত কারণে বাঁকা হয়ে হাঁটতেন বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘জন্মগত থেকে হয়তো একটু অসুস্থতা ছিল। একটু বাঁকা হয়ে হাঁটতেন।’ সাইফুল ইসলামের তিন বছরের এক মেয়ে রয়েছে।
একই সঙ্গে নিহতের স্ত্রী আবারও সন্তানসম্ভবা বলেও জানান তিনি।
সাত ভাই-বোনের মধ্যে আলিফ তৃতীয় ছিলেন বলে জানান তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন সেশন জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী। বেশ কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফ।
একই সঙ্গে লোহাগাড়া উপজেলার বিএনপির লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য ছিলেন বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের (বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন) রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। এ সংগঠনের ভোটার তালিকায় রয়েছে তার নাম।
এ হত্যাকাণ্ডের পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন। একই সঙ্গে আরেকটি স্ট্যাটাসে নিহত আলিফ বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবী প্যানেলের বলে দাবি করেছেন।