
দেশের চার বিমানবন্দরে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য ‘হেভি লাগেজ ট্রলি’ কেনায় পুকুর চুরির অভিযোগ উঠেছে। ১৬০ ডলারে লাগেজ ট্রলি ৩৭০ ডলারে ক্রয় করা হয়েছে। আর এমন কেনাকাটায় সরকারের লোকসান হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।
ওই অভিযোগ যাচাই-বাছাই করতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান কার্যালয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযানে গিয়ে ট্রলি ক্রয়ের বাজার দর যাচাই কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি, অনুমোদনের কপিসহ ল্যাগেজ ট্রলি ক্রয়ের রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) মালামাল কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে ১৬০ ডলার মূল্যমানের লাগেজ ট্রলি ৩৭০ ডলারে ক্রয় করার অভিযোগসহ অন্যান্য অভিযোগের দরপত্র সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
দুদক জানায়, অভিযানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ট্রলি ক্রয়ের বাজার দর যাচাই কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি, অনুমোদনের কপিসহ ল্যাগেজ ট্রলি ক্রয়ের রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযানকালে পর্যাপ্ত রেসপসিভ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবেদন না করার কারণে দরপত্রের পুনঃদরপত্র না হওয়া, উচ্চমূল্যে লাগেজ ট্রলি ক্রয়ের কারণ ইত্যাদি পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়াও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য ও রেসপন্সিভ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা সনদসহ অন্যান্য রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই করছে দুদক টিম। রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ করে শিগগিরই বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনের দাখিল করা হবে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেশের চারটি বিমানবন্দরে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য এক হাজার ‘হেভি লাগেজ ট্রলি’ কেনায় বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকায় এসব ট্রলি কেনার জন্য রে ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়। চীনের তৈরি ট্রলির দাম ধরা হয় ৩৭০ মার্কিন ডলার। অথচ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর ট্রলির দাম গড়ে ১৬০ ডলার, এমনকি জার্মানির শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের ট্রলির দামও ২১০ ডলার। বেবিচকের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড স্টোরস ইউনিট দ্বিগুণেরও বেশি দামে ট্রলি কেনা হয়েছে। আর এমন কেনাকাটায় সরকারের প্রায় ৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। শুধু ট্রলি নয়, বিভিন্ন কেনাকাটায় একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতি ঘটছে। বেবিচকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে।