
রাজধানীর মাতুয়াইলে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র তৈরি হয়। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের এই সংঘর্ষ চলে অন্তত দুই ঘণ্টা। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে।
দেওয়া হয়েছে আগুনও। হামলায় মোল্লা কলেজের গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট হয়েছে। জিনিসপত্র চুরির অভিযোগও করেছে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও বিজিপি মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষের এই ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর গুঞ্জন উঠলেও পুলিশ বলছে, তারা মৃত্যুর কোনো তথ্য পায়নি। তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের কারণে গতকাল ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়কে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এর আগে হামলার জেরে ঢাকার সঙ্গে অন্য জেলাগুলোর যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের আজ মঙ্গলবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
যা বলছে কলেজ কর্তৃপক্ষ : ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর বলেন, ‘হামলায় আমাদের কলেজের প্রথম থেকে ১২ তলা পর্যন্ত সব ধ্বংস করা হয়েছে। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘দুপুরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই সিসিটিভিতে দেখি প্রচুর ছেলেমেয়ে ক্যাম্পাসে এসেছে। গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ইচ্ছামতো ভাঙচুর করেছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে। গ্যাসলাইন ছেড়ে দিয়েছে।’
হামলায় সোহরাওয়ার্দী কলেজের অ্যাম্বুল্যান্স, প্রাইভেট কারসহ পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর এবং কলেজের গুরুত্বপূর্ণ মালপত্র লুট করা হয়েছে বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে।
আহতরা হাসপাতালে : সংঘর্ষে আহতদের রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচয় পাওয়া কয়েকজন হলো সোহরাওয়ার্দী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের রাজীব (১৯) ও দ্বিতীয় বর্ষের শাহেদুল (২০); নজরুল কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের রানা (২০), মারুফ (১৯), রুমান (১৯), হাসিনুর (১৯) ও আরাফাত (১৯); স্নাতক প্রথম বর্ষের অনুপম দাস (২৩) ও দ্বিতীয় বর্ষের সুমন (২২) এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ হাতিরঝিল শাখার উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের হুমায়ুন (২০)।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক কালের কণ্ঠকে জানান, গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে আহত অবস্থায় ৩০ জনকে আনা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থী ছাড়াও দু-তিনজন চালক ও পথচারী রয়েছে।
আহত হয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছে সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজের অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া কয়েকজন হলো নাইম (২০), সিয়াম (১৯), মোল্লা সোহাগ (১৮), রাজিম (১৭), শরিফুল (১৭), জাহিদ (২৫), মোস্তফা (২৩), রাতুল (২১), শফিকুল ইসলাম (২৬), মেহেদী হাসান (২৪), সজীব বেপারী (২৮), ফয়সাল (১৯), সাগর (২১), ইমন (২৪) ও সিয়াম (১৮)।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. মাহমুদ গতকাল বিকেলে বলেন, প্রায় ৩০ জন আহত এসেছে। এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। কয়েকজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ : যাত্রাবাড়ী এলাকায় তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের একাদশ শ্রেণির নাফি (১৭) নামের এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে কে বা কারা তাকে গুলি করে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন এই শিক্ষার্থীর পেটে গুলি বিদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
যা বলছে আহতরা : কবি নজরুল কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফ হোসেন বলেন, ‘হামলায় আমাদের কলেজের এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। গত রবিবারের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আমরা মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার সময় ওই কলেজের পক্ষ নিয়ে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
কেন এই হামলা : গত ১৮ নভেম্বর পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদার মারা যায়। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগে গত রবিবার ‘সুপারসানডে’ নামের ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিল মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি চলাকালে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ কেন্দ্রে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিচ্ছিল সরকারি কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। হামলার কারণে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঝপথে পরীক্ষা স্থগিত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে গতকাল ‘মেগামানডে’ কর্মসূচি ঘোষণা করে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মাতুয়াইলে মোল্লা কলেজে গিয়ে সেখানে হামলা চালায়। এসময় মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে যা দেখা গেছে : সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে বেধড়ক মারধর করা হলে তারা সড়কে লুটিয়ে পড়ে। আর মোল্লা কলেজের সামনের কাচসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ভাঙচুর করা হয়েছে।
বিকেলে পরিস্থিতি শান্ত : মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে সংঘর্ষের পর গতকাল বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। সন্ধ্যার আগেই পুরো কলেজের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী৷
তিনজনের মৃত্যুর গুঞ্জন : গতকাল দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করে, কলেজে বর্বর হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে। তথাকথিত সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী প্রবেশ করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এই হামলায় তিনজন শিক্ষার্থী প্রাণ হারায় বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও পরে জানা যায় যে বিষয়টি স্রেফ গুঞ্জন।
যা বলছে পুলিশ : পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার ছালেহউদ্দিন বলেন, ‘অন্তত ২৫ হাজার শিক্ষার্থী যাত্রাবাড়ী মোড়ে জড়ো হয় মোল্লা কলেজে হামলার জন্য। আমরা তাদের বারণের চেষ্টা করলেও কথা শোনেনি তারা। এরপর তারা ব্যাপক ভাঙচুর করে। এর সঙ্গে এলাকার জনগণও যোগ দেয়।’
তিন কলেজের সংঘর্ষে কোনো শিক্ষার্থী মারা যায়নি—ডিএমপি : গতকাল ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তিন কলেজের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনজন নিহত হয়েছে বলে অনেকে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা মোটেও সঠিক নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, গত ১৬ নভেম্বর মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১৮ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। সেই দিন রাতে তার পরিবার ও কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ভুল চিকিৎসায় অভিজিতের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। ২০ নভেম্বর আবারও মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ৫০০ থেকে ৬০০ শিক্ষার্থী ওই হাসপাতালে এসে ভাঙচুর চালায়।
গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরি; ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা : ভাঙচুর, গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরির অভিযোগে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের অজ্ঞাতপরিচয় আট হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল পুলিশের উপপরিদর্শক এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর বাদী হয়ে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় মামলাটি করেন। আদালতে সূত্রাপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজে আজ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ : মাতুয়াইলে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার পর পুরান ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে এক দিনের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধের বিষয়টি গতকাল নিশ্চিত করেছেন অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায়।
অন্যদিকে গতকাল কবি নজরুল সরকারি কলেজের ওয়েবসাইটে আজ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের বিষয়টি জানানো হয়।
হামলায় মোল্লা কলেজের ৭০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে—অধ্যক্ষ : রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের প্রায় ৭০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন। গতকাল বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তিনি বলেন, ‘রাজধানীর টপ টেন কলেজের একটি মোল্লা কলেজ। এই কলেজটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করবে তা ভাবতেও পারিনি। আমাদের সব ধ্বংস করে দিয়েছে।’
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার মতো উল্লেখ করে অধ্যক্ষ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হামলায় আমাদের ১২ তলা ভবনের কোনো কাচ আর অক্ষত নেই। পাঁচটি লিফট, কম্পিউটার ও সায়েন্স ল্যাব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামলাকারী শিক্ষার্থীরা নগদ টাকা, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, সার্টিফিকেট, ৩০০টির বেশি ফ্যান, ৩০টির মতো ল্যাপটপ, অসংখ্য কম্পিউটারসহ মূল্যবান ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস লুট করেছে।’ এ ছাড়া হামলা ও সংঘর্ষে মোল্লা কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হামলার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যথাযথ ভূমিকা রাখেনি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু হামলার সময় তাঁরা দূরে থেকে পরিস্থিতি দেখেছেন।’
সমন্বয়কদের বৈঠকে যায়নি কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ : দ্বন্দ্ব নিরসনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গত রাত ১০টায় যে বৈঠক আহ্বান করেছিলেন তাতে যায়নি কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ফেডারেশনসহ ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো।
কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় বসার জন্য ফোন এসেছিল, কিন্তু আমরা যাচ্ছি না। এটা আলোচনার সময় নয়। শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছি। এখন পর্যন্ত ৪০ জন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের রক্তের ওপর দিয়ে কোনো সংলাপে যাব না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি তারা আমাদের এই সংকট সময়ে আমাদের কথা ভেবেছে। তবে আমরা চাই আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব কিছু তদন্ত করুক। মন্ত্রণালয় যদি সবাইকে নিয়ে বসে তখন আমরা বসব। মোল্লা কলেজের সঙ্গে এখন আলোচনায় বসলে আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।’
দুই কলেজের অধ্যক্ষ জানান, তাদের কোনো শিক্ষার্থী নিহত হয়নি। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাভার কলেজ বহন করবে।
ভাঙচুরের ঘটনায় অনির্দিষ্টকাল বন্ধ সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ : ভাঙচুরের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গতকাল সোমবার কলেজের ফাদার ব্রাদার প্লাসিড পিটার রিবেরু সিএসসি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেপরবর্তী নির্দেশনা দেওয়ার আগ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সব ক্লাস, পরীক্ষা ও অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সব কিছু অনুকূলে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম যথারীতি শুরু হবে।