
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশের ফলোঅন বাঁচানোর ব্যাটিংয়ে ফিফটি করে মুমিনুল হক প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। বাংলাদেশিদের মধ্যে এর আগে তুষার ইমরান ও নাঈম ইসলাম এই কীর্তি গড়েছেন।
অ্যান্টিগায় রবিবার দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে অফ স্টাম্পের বাইরে রাখা আলজারি জোসেফের ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করে কভার-পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি মারতেই লাল বলের ক্রিকেটে মুমিনুলের ১০ হাজার রান পূর্ণ হয়। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এই কীর্তি গড়তে ১৫২ ম্যাচে ২৬৭ ইনিংস খেলেছেন মুমিনুল।

বাংলাদেশিদের পক্ষে সবার আগে এই ক্লাবে নাম লেখানো তুষার ইমরানের ৩০৭ ইনিংসে রান ১১ হাজার ৯৭২। নাঈম ইসলাম ১০ হাজার ৬২৪ রান করেছেন ২৭৮ ইনিংস খেলে। স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে এদিন শুরু থেকেই আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন মুমিনুল। পুরোপুরি ফিফটি করে আউট হওয়ার আগে তৃতীয় উইকেটে শাহাদাত হোসেন দীপুর সঙ্গে ৪৫ আর চতুর্থ উইকেটে লিটন দাসের সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়ে যান বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
৬৮ টেস্টে ১৩টি সেঞ্চুরির সঙ্গে ২১তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মুমিনুলকে আউট করেন জেইডেন সিলস। ক্যারিবিয়ান পেসারের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন বাঁ-হাতি মুমিনুল। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার রান এখন ১০ হাজার পাঁচ। প্রায় ৪০ গড়ে ২৯টি সেঞ্চুরির সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি তার ৪৬টি।
অ্যান্টিগা টেস্টে তৃতীয় দিনে ফলোঅন এড়িয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিক ওয়েস্ট উইন্ডিজ। শুরুর দিকে উইকেট হারালেও শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি। শেষদিকে ৪৫০ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ঘোষণা করে তারা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রায় ফলো অনে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত জাকের আলীর ৫৩ রানে ভর করে শেষ পর্যন্ত ফলোঅন এড়াতে পেরেছে সফরকারীরা।
এর আগে অ্যান্টিগা টেস্টে ৪৫০ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান সংগ্রহ করে দ্বিতীয় দিন শেষ করে টাইগাররা। তৃতীয় দিনের শুরুতেই শাহদাত হোসেন দিপুর উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে মুমিনুল হক প্রতিরোধ গড়লেও ইনিংস বড় করতে পারেননি এই দুই ব্যাটার।
তাদের বিদায়ে ফলোঅনের শঙ্কায় পড়ে টাইগাররা। তবে জাকের আলি ও তাইজুল ইসলামের ব্যাটে ফলোঅন এড়ায় লাল-সবুজের বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৯ রান সংগ্রহ করে।
মুমিনুল ২৩ বলে ৭ ও দিপু ৩১ বলে ১০ রানে নিয়ে তৃতীয় দিনে খেলতে নামেন। দলীয় ৬৬ রানে ৭১ বলে ১৮ রান করে আউট হন তিনি। দিপুর বিদায়ের পর ক্রিজে আসা লিটনকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন। দেখেশুনে খেলে রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি তুলে নেন মুমিনুল।
৬২ রানের জুটি গড়েন লিটন ও মুমিনুল। তবে দলীয় ১২৮ রানে ১১৬ বলে ৫০ রান করে আউট হন মুমিনুল। তার বিদায়ের পর পরই সাজঘরের পথ ধরেন লিটন। ৭৬ বলে করেন ৪০ রান।
এরপর জাকের আলিকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে দলীয় ১৬৬ রানে ৬৭ বলে ২৩ রান করে আউট হন মিরাজ। তার বিদায়ে বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর তাইজুলকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সামাল দেন জাকের আলি।
৬৮ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। ফিফটি তুলে নেন জাকের। তবে দলীয় ২৩৪ রানে ৬৩ বলে ২৫ রান করে আউট হন তাইজুল। ফিফটির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকের। ফিরেছেন ৫৩ রান করে। তার বিদায়ের পর ক্রিজে এসে সুবিধা করতে পারেননি হাসান মাহমুদ। ১৬ বলে ৮ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম মিলে দিনের বাকি খেলা শেষ করেন। তাসকিন ১১ ও শরিফুল ৫ রানে অপরাজিত আছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস)– ৪৫০/৯ (১৪৪.১ ওভার) (লুইস ৯৭, আথানেজ ৯০, হজ ২৫, সিলভা ১৪, গ্রেভস ১১৫*, রোচ ৪৭, সিলস ১৮, শামার ১১*; হাসান ৩/৮৭, তাসকিন ২/৭৬)
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)– ২৬৯/৯ (৯৮ ওভার) (জাকির ১৫, জয় ৫, দিপু ১৮, মুমিনুল ৫০, লিটন ৪০, মিরাজ ২৩, জাকের ৫৩; আলজারি ৩/৬৯, সিলস ২/৪২)