
আজ রোববার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়েছে বিদ্রোহীরা। আসাদ পরিবার পালিয়ে গেছে রাশিয়ায়। আসাদ সরকারের এই পতন মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তারকারী সব পক্ষকে ফেলে দিয়েছে গভীর শঙ্কায়। এর মধ্যে এক পক্ষ যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষমতা এখন বিদ্রোহী হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) দখলে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে বেশ সক্রিয় মার্কিন প্রশাসন। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, এইচটিএসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলকারী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বিদ্রোহীদের সঙ্গে ‘সরাসরি যোগাযোগ’ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
শনিবার ১৪ ডিসেম্বর জর্ডানে বিভিন্ন আরব দেশ, তুরস্ক এবং ইউরোপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার পরে এই মন্তব্য করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সভায় অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে একমত হন।
এটি এইচটিএসের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের সরাসরি যোগাযোগের প্রথম স্বীকৃতি। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে।
যুক্তরাষ্ট্র এক যৌথ বিবৃতিতে এমন একটি সিরীয় সরকারের জন্য আহ্বান জানান, যা সংখ্যালঘুদের অধিকারকে সম্মান করে এবং ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর’ জন্য ভিত্তি প্রদান করে না। সভায় আলোচনা হয়েছে নতুন শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব নিয়েও।
জর্ডানে বৈঠকে অংশ নেওয়া ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক খেলোয়াড়রা আরেকটি লিবিয়ার পরিস্থিতি দেখতে চান না, যা কর্নেল গাদ্দাফির অপসারণের পর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, বিদ্যমান সিরীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংরক্ষণ ও সংস্কার করতে হবে।
এইচটিএস সিরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী। তারা বলেছে, বিদ্রোহীরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে আগ্রহী।
ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন এইচটিএসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সিরিয়ায় নিখোঁজ মার্কিন সাংবাদিক অস্টিন টিসের ভাগ্য নিয়েও কথা হয়েছে তাদের।
জর্ডানে অনুষ্ঠিত বৈঠকটিতে অবশ্য সিরিয়ার কোনো প্রতিনিধির উপস্থিতি ছিলেন না। উপস্থিত আটটি আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, সিরিয়া বিভক্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকবে, এমনটিই দেখতে চান তারা।
বৈঠকে ছিল না আসাদ সরকারকে দীর্ঘদিন সহায়তা প্রদানকারী দুই দেশ – ইরান এবং রাশিয়াও।
বাইডেন প্রশাসন এইচটিএসকে একাই দেশের সর্বময় ক্ষমতা দখল না করার অনুরোধ করেছে। পরিবর্তে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে।