
পবিত্র দ্বীন ইসলাম এমন একটি দ্বীন বা হুকুম-আহকাম, যার মধ্যে রয়েছে জিন ইনসানের সকল বিষয়ের সঠিক সমাধান। জিন-ইনসান কি করবে, কি করবে না, কি খাবে কি খাবে না, কোন পোশাক পরবে, কোন পোশাক পরবে না, অর্থাৎ মাথার তালু হতে পায়ের তলা এবং হায়াত থেকে মউত পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ের সঠিক সমাধান। সুবহানাল্লাহ! সমাধানকৃত বিষয়ের মধ্যে অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে হালাল ও হারাম। শরীয়ত প্রণেতা অর্থাৎ খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা জিন ইনসানের জন্য, বিশেষ করে মুসলমানদের উপর কিছু বিষয়কে ফরয করে দিয়েছেন যা পরিত্যাগ করা জায়িয নেই। এবং কিছু বিষয় সম্পর্কে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন যা অতিক্রম করা বৈধ নয় এবং কিছু জিনিস হারাম করে দিয়েছেন যার ধারে কাছে যাওয়াও ঠিক নয়। যেমন- খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّـهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّـهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ

অর্থ: “তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করুন যারা খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং পরকালের প্রতি ঈমান রাখে না এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে সব বিষয় বা বস্তু হারাম করেছেন সেগুলোকে হারাম হিসেবে মানে না এবং সত্য দ্বীন (ইসলাম) উনাকে গ্রহণ করে না। (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ما احل الله فى كتابه فهو حلال وما حرم فهو حرام وما سكت عنه فهو عافية فاقبلوا من الله العافية فان الله لم يكن نسيا ثم تلا هذه الاية (وما كان ربك نسيا)
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কিতাবে যা হালাল করেছেন তা হালাল, আর যা হারাম করেছেন তা হারাম, আর যে বিষয়ে তিনি নীরব থেকেছেন তা ক্ষমাস্বরূপ অর্থাৎ মুবাহ। সুতরাং তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত ক্ষমাকে অর্থাৎ মুবাহকে গ্রহণ করো। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি বিস্মিত হন না, কোনো কিছু ভুলে যান না। তারপর তিনি এই পবিত্র আয়াত শরীফ পাঠ করেন- ‘আপনার প্রতিপালক বিস্মৃত হন না।’ (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৪)।” (মিশকাত শরীফ)
আর এই হারামসমূহ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার সীমারেখা। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
تِلْكَ حُدُودُ اللَّـهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا
অর্থ: “এসব মহান আল্লাহ পাক উনার সীমা রেখা। সুতরাং তোমরা এগুলোর নিকটেও যেয়ো না।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৭)
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সীমালঙ্ঘনকারী ও হারাম অবলম্বনকারীদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ভীতি প্রদর্শন করে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَن يَعْصِ اللَّـهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُّهِينٌ
অর্থ: “যে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ নিষেধের ব্যাপারে অবাধ্য হয় এবং উনাদের দেয়া সীমারেখাসমূহ লঙ্ঘন করে, তাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি দোযখের আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরস্থায়ী থাকবে। আর তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)
এজন্যই হারাম থেকে বেঁচে থাকা ফরয।
আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ما نهيتكم عنه فاجتنبوه وما امرتكم به فافعلوا منه ما استطعتم
অর্থ: “আমি তোমাদেরকে যা কিছু নিষেধ করি তোমরা তা থেকে বিরত থাকো। আর যা কিছু আদেশ করি তা পালন করো সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী।” (মুসলিম শরীফ)
-আল্লামা নাজমুল হুদা ফরাজী।