
সংবিধানের অসম্পূর্ণতা দূর করার লক্ষ্যে সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশনে সুনির্দিষ্ট ১০টি প্রস্তাব লিখিত আকারে পাঠিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

সিপিবি বলেছে, সংবিধানের অসম্পূর্ণতা দূর করার লক্ষ্যে ‘১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গৃহীত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের’ অঙ্গীকারকে অবলম্বন করে ১৯৭২-এ প্রণীত সংবিধানের মূলভিত্তি অর্থাৎ চার মূলনীতি ঠিক রেখে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ত্রুটি, দুর্বলতা ও অসম্পূর্ণতা দূর করে সংবিধানের পূর্ণতা আনার জন্য এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে।
সিপিবি’র পাঠানো ১০ দফা মূল প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে-
১. মূলনীতির ক্ষেত্রে আদিবিধানের চার নীতি বহাল রাখা;
২. সংবিধানে আদিবাসীসহ অন্যান্য জাতিসত্তার স্বীকৃতি প্রদান;
৩. জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের নিশ্চয়তা প্রদানকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে এর দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেওয়া;
৪. রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা;
৫. দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া;
৬. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকার পুনঃপ্রবর্তন করা;
৭. আর্থিক ক্ষমতার নিশ্চয়তাসহ স্থানীয় সরকারের প্রকৃত ও পূর্ণ ক্ষমতায়ন ও রাষ্ট্র প্রশাসনের গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রিকরণ করা ও বরাদ্দ এবং কাজ সুনির্দিষ্ট করা;
৮. নারী আসনের সংখ্যা বাড়ানো ও সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা করা;
৯. সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন করা;
-এটি না হওয়া পর্যন্ত ‘না’ ভোট ও প্রতিনিধি প্রত্যাহার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং
১০. বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ কালাকানুন বাতিল করা।
প্রস্তাবে সিপিবি বলেছে, জনগণের সম্মতি নিয়ে সংবিধান সংশোধনী কার্যকর করতে হবে। অন্য কোনো পন্থায় তা স্থায়ী হবে না। এ বিষয়ে উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদেরই রয়েছে। কিন্তু এর পেছনে জনগণের সচেতন সমর্থন থাকতে হবে। তাই প্রয়োজন, সংবিধানের সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে খোলামেলা আলোচনা করা। বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে এবং এ বিষয়ে ঐক্যমত্য গড়ে তোলার কাজ অনেকটা পরিমাণে অগ্রসর করতে সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গৃহীত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের’ অঙ্গীকার অবলম্বন করে ১৯৭২-এ প্রণীত সংবিধানের মূলভিত্তি অর্থাৎ চার মূলনীতি ঠিক রেখে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ত্রুটি, দুর্বলতা ও অসম্পূর্ণতা দূর করে সংবিধানের পূর্ণতা আনার জন্য সিপিবির প্রস্তাবে সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, মূলনীতির ক্ষেত্রে আদিবিধানের ৪-নীতি বহাল রাখা; সংবিধানে আদিবাসীসহ অন্যান্য জাতিসত্তার স্বীকৃতি দেওয়া; জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের নিশ্চয়তা দেওয়াকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেওয়া এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।