
ইউক্রেনে সরাসরি কাজ করে পারবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঠিকাদারেরা। যাতে করে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সমরাস্ত্র মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে এসব প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এই অনুমতি দিয়েছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন—এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনএনকে বলেছেন, মার্কিন ঠিকাদারেরা মূলত ইউক্রেনকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ও প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের কাজ করবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের ঠিক আগে, চলতি নভেম্বর মাসের শুরুতে এই বিষয়টির অনুমোদন দেয় বাইডেন প্রশাসন। অনুমোদিত নতুন নীতি পেন্টাগনকে ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের অভ্যন্তরে কাজের জন্য মার্কিন কোম্পানিগুলোকে চুক্তি প্রদানের অনুমতি দেবে। কর্মকর্তাদের আশা, এই অনুমোদন ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতকে ত্বরান্বিত করবে।
তবে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই এই নীতি বজায় রাখবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। কারণ, ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় ফিরে আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করবেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘ইউক্রেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্র দেশগুলো যেসব সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে সেগুলো মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করার জন্য প্রতিরক্ষা বিভাগ অল্প কিছু ঠিকাদারদের জন্য অনুমতি চাইছে। যারা ইউক্রেনে আমাদেরও দেওয়া সহায়তা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ‘এই ঠিকাদারেরা রণক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে অবস্থান করবেন এবং তারা রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করবে না। তারা ইউক্রেনীয় সশস্ত্রবাহিনীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সামরিক সরঞ্জামের দ্রুত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে সহায়তা করবে। যাতে সেগুলোকে দ্রুত রণক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনা যায়।’
বাইডেন প্রশাসনের নতুন এই নীতি ‘ইউক্রেন ইস্যুতে’ আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ার উপায় খুঁজছে। পেন্টাগন শিগগিরই অনলাইনে চুক্তিগুলো প্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিগত দুই বছরের বেশি সময় ধরে, মার্কিনিরা যেন ইউক্রেনে রণক্ষেত্র থেকে দূরে থাকে সেই বিষয়ে জোর দিয়েছেন। এর ফলে, ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া মার্কিন সামরিক সরঞ্জামের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও সেগুলো দ্রুত সারিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, এসব সরঞ্জাম ইউক্রেন থেকে বের করে পোল্যান্ড, রোমানিয়া বা অন্যান্য ন্যাটো দেশগুলোতে নেওয়া হয়। তারপর তা আবার ইউক্রেনে আনা হয়। এই প্রক্রিয়ায় বেশ সময় নেয়।