
মুন্সীগঞ্জে অচেনা এক ব্যাধি- সমন্বয়ক
ক্রাইম রিপোর্টারঃ

আজকের এই সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, আমাদের দেশটি যেন নতুন এক ব্যাধিতে আক্রান্ত,যার নাম সমন্বয়ক।অথচ জুলাই বিপ্লবের সময়ে,মাত্র ৭ মাস আগেও যে বীরত্বের পরিচয় তারা দিয়েছে, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা।ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দোসরদের নির্মূলে সমন্বয়করা ছিলো এক সাহসী পদবী,যা জুলাই বিপ্লব ঘিরে নতুন ভাবে পরিচিত হয়েছিল এবং জনগণের সামনে এসেছিলো।তবে দুঃখের বিষয়, বর্তমানে সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে যত্রঅত্র বিভিন্ন ধরনের অসৎ উদ্দেশ্য সাধন করা হচ্ছে,এমনকি সত্যিকারের সমন্বয়কদের নাম খারাপ করার উদ্দেশ্যেও অনেক জায়গায় আওয়ামী ও ছাত্রলীগের হাতুড়ি বাহিনীর লোকেরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে জেলা শহরগুলোতে এর অবস্থা ভয়াবহ।মুন্সীগঞ্জের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে সমন্বয়ক শব্দটি শুনলেই যে বিষয়টি উঠে আসে তা হলো-মাদকাসক্ত,অযোগ্য, অশিক্ষিত,আওয়ামী লীগের চেলা,দুর্নীতিবাজ,চোর,ডাকাত, স্বার্থপর,লেজুরবৃত্তি,ব্যক্তিত্বহীন, চামচা,কিশোর গ্যাং এবং আতঙ্কের এক নতুন নাম।এসব নামধারী সমন্বয়করা দেশের সমন্বয়কারী শক্তিকে বিকৃত করছে,জনগণের মধ্যে এক অনিশ্চিত আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং একইসাথে আমাদের ঐক্য, সম্পর্ক এবং সমঝোতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।এক সময় যাদেরকে আমরা সমাজের জন্য ক্ষতিকর, হিংস্র এবং অপরাধী হিসেবে চিনতাম,আজ তাদের হাতে রয়েছে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব। তাদের নেতৃত্বের যে কলঙ্ক এবং ভয়াবহতা ছিল,তা আজ রাজনৈতিক ক্ষমতার খোলস পড়েছে।সমন্বয়ক নামে শুধু মুখোশ পাল্টেছে,মুখ কিন্ত এখনো একই রয়ে গেছে।এরা এমন এক গ্যাং যারা মাদকাসক্ত, বিভিন্ন রকমের সামাজিক ক্ষতি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত।যারা সাধারণ মানুষের জন্য আতঙ্ক,তারাও আজ দেশ এবং জেলা পর্যায়ের সমন্বয়ক। কি এক প্রহসন…! এজন্যই বুঝি কবি লিখেছিলেন,অদ্ভুত এক উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ!এসব নামধারী এবং টাকায় কেনা সমন্বয়করা অপরাধের দায়ে আজ সাজাপ্রাপ্ত হতে পারতো, অথচ আজ তারা রাষ্ট্রের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়,নীতি প্রণয়ন করে এবং দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।এমন ব্যক্তিত্বের সামনে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ আজ ভীতসন্ত্রস্ত! যখন নেতৃত্বের নামে দুর্নীতি,অপরাধ ও অযোগ্যতার জয় হয়,তখন জাতি হিসেবে আমাদের অগ্রগতি নিশ্চিন্তে বাঁধাগ্রস্ত হয়।এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে,এটা কি আমাদের ভবিষ্যৎ হতে পারে?রাজনৈতিক দলের মধ্যে নানা সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে থাকা এই অযোগ্য চেলারা দেশের উন্নয়নে সহায়তা করতে কতটুকু সক্ষম? কি তাদের যোগ্যতা? তারা অতদূর কিভাবে নাগাল পায়? কারা তাদের পুর্নবাসন করছে? এক সময় যারা ছিলো দেশ এবং জনগণের জন্য বিভিষিকা,তারা কেনো আজ আবারো ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে? দেশের নেতৃত্বে যদি এসব মুখোশধারী গ্যাং অংশ নিতে শুরু করে এবং আমরা যদি তা প্রতিহত করতে না পারি,তবে তা দেশের জন্য আশু সংকটের কারণ।