
আজ বিশ্ব মেছোবিড়াল দিবস। বিপদাপন্ন ও নিরীহ এই প্রাণীটির সংরক্ষণে জনসচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।
মেছোবিড়াল দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে — ‘জনগণ যদি হয় সচেতন, মেছোবিড়াল হবে সংরক্ষণ’।

শনিবার ১ ফেব্রুয়ারি দিবসটি ঘিরে আগারগাঁও বন অধিদপ্তরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
দিবসটি ঘিরে সরকারের পক্ষ থেকে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণে জনসচেতনতা বাড়াতে পোস্টার ডিজাইন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতাটি দুটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ‘ক’ গ্রুপে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ‘প্রকৃতিতে মেছোবিড়ালের গুরুত্ব’ বিষয়ে এবং ‘খ’ গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা ‘মেছোবিড়াল সংরক্ষণে আমাদের করণীয়’ বিষয়ে অংশ নিয়েছেন। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরও বন অধিদপ্তরের অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
বিশ্ব মেছোবিড়াল দিবস, ২০২৫’ এর আয়োজন সম্পর্কে উদযাপন কমিটির সদস্য শুভব্রত সরকার বলেন, মেছোবিড়াল বাংলাদেশে প্রায় সব জায়গায় পাওয়া যায়। এটি ছোট বিড়াল প্রজাতির প্রাণী। এরা নিশাচর, প্রধান খাবার মাছ। মূলত, গ্রামীণ বনাঞ্চলের ঘন ঝোপঝাড়ে বাস করে। আর হাওড়, বিল, পুকুর ও অন্যান্য অগভীর জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে খায়।
তিনি বলেন, এরা একেবারেই হিংস্র নয় বরং মানুষের সামনে পড়লে পালিয়ে যায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে জনসংখ্যা বাড়ার কারণে দেশের গ্রামীণ বনাঞ্চলগুলো ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। পরিবেশ দূষণ ও অনিয়ন্ত্রিত ভরাটের কারণে কমে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোর মাছের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। যার ফলে মেছোবিড়াল সহজেই মানুষের সামনে এসে পড়ছে। ফলে সংঘাত বাড়ছে। সাধারণ জনগণ একে চিতাবাঘের বাচ্চা, বাঘ ইত্যাদি মনে করে অহেতুক ভীতিজনিত কারণে মেরে ফেলছে। তা ছাড়া খাবারের অভাবে মেছোবিড়ালগুলো মাঝেমধ্যেই হাঁস-মুরগির খামারে চলে আসছে ও মারা পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। জনগণ যদি সচেতন না হয়, তাহলে অচিরেই মেছোবিড়ালের মতো এমন সুন্দর একটি প্রাণী বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাবে।